ফৌজদারি মামলা হলে কি করণীয়?
আগাম জামিন কি?
কোন ক্ষেত্রে হাইকোর্ট আসামীকে আগাম জামিন প্রদান করে থাকে?
ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আট সপ্তাহ পর্যন্ত আগাম জামিন বা anticipatory bail প্রদানের এখতিয়ার রয়েছে।
১৮৯৮ সালের ফোজদারি কার্যবিধির ৪৯৮ ধারা মোতাবেক আসামী পুলিশ কর্তৃক ধৃত বা গ্রেফতার হবার পূর্বেই আগাম জামিন পেতে পারেন।
কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের হলে বা আদালত কর্তৃক গ্রেফতারি পরোওয়ানা জারী হলে পুলিশ উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার পূর্বক আদালতে উপস্থাপন করে থাকে এবং যথাযথ ক্ষেত্রে রিমান্ডের আবেদন করে। সাধারণত আসামীর পুলিশ কর্তৃক ধৃত বা গ্রেফতার হবার আশঙ্কা, গ্রেফতার হলে সামাজিক সুনাম ক্ষুণ্ণ এবং পুলিশ কর্তৃক থানায় নির্যাতনের শঙ্কার কারনেই আগাম জামিন প্রদান করা হয়।
অনেক ক্ষেত্রেই ফোজদারি অভিযোগে একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে হয়রানী মূলক বা মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি হাইকোর্টে আগাম জামিনের দরখাস্ত আনায়ন পূর্বক হাইকোর্ট ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে সাময়িক সময়ের জন্য অগ্রিম জামিন পেতে পারেন।
আগাম জামিন প্রদান করা হলে উক্ত আসামিকে নির্দিষ্ট সময় শেষে সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সম্প্রতি State v Professor Morshed Hasan Khan, 71 DLR (AD) (2019), মামলায় আগাম জামিন প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্ত পূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেছেন। সর্বোচ্চ আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন যে- “The anticipatory bail granted by the Court should ordinarily be continued not more than 8 (eight) weeks and shall not continue after submission of charge sheet, and the same must be in connection with non-bailable offence.”
আগাম জামিন প্রদানের ক্ষেত্রে ১৬ (ষোলটি) সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছে আপিল বিভাগ। আগাম জামিনের দরখাস্ত নিষ্পত্তিতে হাইকোর্টকে দিকনির্দেশনা সমূহ যথাযথ ভাবে বিবেচনায় নিতে হবে। দিক নির্দেশনা সমুহের মধ্যে রয়েছে আগাম জামিন প্রদানের ক্ষেত্রে মামলার এজাহারটি পর্যালোচনা করতে হবে।
আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগে কতটা গুরুত্বর ও অপরাধ সংঘটনে তার ভূমিকা কি ছিল, আসামীকে আগাম জামিন প্রদান করা হলে পলাতক হবে কিনা, আসামীর চরিত্র, আচরণ, সমাজে তার অবস্থান, আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগটি তাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে হয়রানী করার উদ্দেশে আনায়ন করা হয়েছে কিনা বিষয় সমূহ আদালতকে দেখতে হবে। আগাম জামিন একটি ব্যাতিক্রমি সুবিধা যেটি শুধু বিশেয ক্ষেত্রেই প্রদান করতে হবে।
আগাম জামিনের ক্ষেত্রে শর্ত থাকবে যে আসামী মামলার কোন সাক্ষীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করবে না।
হত্যা, দস্যুতা, ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলায় আগাম জামিন প্রদানের ক্ষেত্রে অতি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
সাধারণ ক্ষেত্রে আট সপ্তাহের বেশি আগাম জামিন প্রদান করা যাবে না এবং চার্জশীট দাখিলের পর জামিন কোনক্রমেই বহাল থাকবে না এবং এটি শুধু অ-জামিনযোগ্য মামলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। জামিন অপব্যবহারের অভিযোগ থাকলে জামিন বাতিল করার এখতিয়ার আদালতের থাকবে।
আগাম জামিন প্রদানের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র বনাম মোর্শেদ হাসান খান (৭১ ডি এল আর (এ ডি) ২০১৯) এ প্রদ্দত মাননীয় আপিল বিভাগের নির্দেশনা সমূহ নিম্মরূপঃ
Few principles for grant of anticipatory bail can be summarised as follows:
(i) The F.I.R. lodged against the accused needs to be thoroughly and carefully examined;
(ii) The gravity of the allegation and the exact role of the accused must be properly comprehended;
(iii) The danger of the accused absconding if anticipatory bail is granted;
(iv) The character, behaviour, means, position and standing of the accused;
(v) Whether accusation has been made only with the object of injuring or humiliating the applicant by arresting him. Because it is to be remembered that a worst agony, humiliation and disgrace is attached to arrest. Arrest leads to many consequences not only for the accused but for his entire family and at the same time for the entire community;
(vi) A balance has to be struck between two factors, namely, no prejudice should be caused to free, fair and thorough investigation and there should be prevention of harassment, humiliation and unjustified detention of the accused;
(vii) The anticipatory bail being an extra ordinary privilege, should be granted only in exceptional cases. Such extraordinary judicial discretion conferred upon the Higher Court has to be properly exercised after proper application of mind to decide whether it is a fit case for granting anticipatory bail not according to whim, caprice or fancy;
(viii) A condition must be imposed that the applicant shall not make any inducement or threat to the witnesses for tampering the evidence of the occurrence;
(ix) The apprehension that the accused is in a position to influence, induce or coerce witnesses to desist from furnishing relevant information to the investigating agency cannot be considered to be imaginary and the court ought to have considered that aspect seriously before granting anticipatory bail.
(x) In the cases involve grave offence like murder, dacoity, robbery, rape etc. where it is necessary to arrest the accused and bring his movements under restraint to infuse confidence among the terror-stricken victims the accused should never be enlarged on anticipatory bail. Such discretion should be exercised with care and circumspection depending upon the facts and circumstances justifying its exercise.
(xi) It is to be borne in mind about the legislative intention for the purpose of granting anticipatory bail because legislature has omitted the provision of Section 497A from the Code.
(xii) It would be improper exercise of such extraordinary judicial discretion if an accused is enlarged on anticipatory for a indefinite period which may cause interruption on the way of holding thorough and smooth investigation of the offence committed.
(xiii) The Court must be extremely cautious since such bail to some extent intrudes in the sphere of investigation of crime.
(xiv) While enlarging an accused on anticipatory bail, the Court must direct the applicant to co-operate with the investigating officer in every steps of holding proper investigation if the same is needed.
(xv) The anticipatory bail granted by the Court should ordinary be continued not more than 8(eight) weeks and shall not continue after submission of charge sheet, and the same must be in connection with non-bailable offence.
(xvi) The Court granting anticipatory bail will be at liberty to cancel the bail if a case for cancellation of bail is otherwise made.